October 10, 2024, 6:24 am

সংবাদ শিরোনাম
আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন

কাশ্মীর ‘যেন এক মৃত্যুপুরী

কাশ্মীর ‘যেন এক মৃত্যুপুরী

ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর ভারতের বাকি অংশ এবং পুরো বিশ্বের থেকে কাশ্মীরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। যার ফলে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানা যাচ্ছে না। এ সুযোগে ছড়াচ্ছে নানা গুজব।এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে গত বুধবার বিবিসি বাংলার একজন প্রতিনিধি জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে যান। তার বর্ণনায় রাতারাতি মুত্যৃপুরীতে পরিণত হওয়া কাশ্মীরের খণ্ডচিত্র উঠে এসেছে।

তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে একশো গজ পরপরই সেনা চৌকি আর কাঁটাতারের ব্যারিকেড। রাস্তায় যত না সাধারণ মানুষ, সেনা সদস্য তার চেয়ে বহুগুণ বেশি।

সড়কে মানুষের ছোট ছোট জটলা। বিশেষ মর্যাদা বিলুপ্ত হওয়ার কারণে তারা কতটা বিক্ষুব্ধ তা তাদের চেহারায় স্পষ্ট।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নিলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আগেই করেছিল। তাই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই কাশ্মীরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দিতে হাজার হাজার বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়।এছাড়া স্বায়ত্তশাসন বাতিল করার পর সেখানে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়েছে।ল্যান্ডফোন, মোবাইলফোন ও ইন্টারনেট সার্ভিস বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

যে কারণে শ্রীনগর পৌঁছানোর ২৪ ঘণ্টা পরও বিবিসির ওই প্রতিনিধি কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। পরে অল্প সময়ে জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় বলে বৃহস্পতিবার জানায় বিবিসি বাংলা।তিনি বলেন,  ঝিলমের তীরের স্তব্ধতা স্পষ্টতই ঝড়ের পূর্বাভাস।

“নানা ঘটনা-বিক্ষোভ-সংঘাতের খবর সংগ্রহ করতে আমি এর আগেও কাশ্মীর এসেছি। কিন্তু অন্য যেকোনো সময়ের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা চলে না। পুরো রাজ্য জুড়ে প্রায় আড়াই লাখ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। টানা কারফিউ জারি রয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। অনেকের বাড়িতেই খাবার ফুরিয়ে গেছে, রেশন ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু কেউ কেনাকাটা করতে বাইরে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। বেরিয়েও লাভ নেই, কারণ সব দোকান বন্ধ।”

স্থানীয় সব পত্রিকা অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সব নিউজ পোর্টাল গত রোববারের পর আর আপডেট হয়নি, কারণ ইন্টারনেট বন্ধ।

দিল্লি বা জম্মু থেকে প্রকাশিত কিছু সংবাদপত্র বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে পৌঁছালে নিমেষে সেগুলো বিক্রি হয়ে যায়। অথচ সেগুলো ছিল তিন দিনের বাসি পত্রিকা। তার উপর সেন্সরের কাঁচির নিয়ে পড়া সংবাদ।

তারপরও মানুষ এগুলো পড়ছে, যেহেতু আর কোন জানার সূত্র নেই, বলেন বিবিসি প্রতিনিধি।

ব্যাপক ধরপাকড়

বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর বিক্ষোভ ঠেকাতে কাশ্মীরের প্রায় ৩০০ রাজনীতিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে আটক বা গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।

গুপকার রোড, যেখানে থাকেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতির মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক, সেখানে কাউকে ঢুকতেই দেয়া হচ্ছে না। ডাল লেকের ধারে গভর্নর হাউজের দিকেও কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

গুজবের শহর হয়ে উঠেছে শ্রীনগর। নানা জায়গায় বিক্ষোভ চলছে বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও শ্রীনগরের কোথাও বিক্ষোভ চোখে পড়েনি বলে জানান বিবিসির ওই প্রতিনিধি।

পাকিস্তানের দৈনিক ডন শ্রীনগরের শ্রী মহারাজা হরি সিংহ হাসপাতলের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শুক্রবার জানায়, ছররা গুলি ও রাবার বুলেটে আহত অন্তত ৫০ জন তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

কেউ কেউ বেরামিতে ১০ হাজার বাড়ি জ¦ালিয়ে দেয়া হয়েছে এবং লোকজন পথে নেমে বিক্ষোভ করছে বলে জানান। কিন্তু এ তথ্য যাচাইয়ের কোনো উপায় নেই।

নিরানন্দ ঈদ

কদিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আজহা। ভেড়ার পাল নিয়ে বহু ব্যবসায়ী শ্রীনগর এসেছিলেন বিক্রির জন্য। কিন্তু কোনো ক্রেতা নেই। হতাশ ব্যবসায়ীরা রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছেন।তারাই বলছেন, মানুষ কেন কিনবে বা কোরবানি দেবে। এমন পরিস্থিতিতে কী কোরবানি দেওয়া যায়, কার কাছে মাংস বিতরণ করবে। কাশ্মীরের মানুষের জন্য এবার আনন্দহীন এক ঈদ অপেক্ষা করছে।

বিবিসি বাংলা জানায়, ঈদের সময় কারফিউ শিথিল করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। কারও ধারণা ১৫ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের পর হয়তো কারফিউ উঠতে পারে।

কিন্তু কাশ্মীরের মানুষ এখন যে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যে আছেন তাতে কোন কিছুতেই কারও কোন আশা নেই, কারও কোন ভরসা নেই।

তবে একটা বিষয় পরিষ্কার। কাশ্মীর জুড়ে বিপুল সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করায় এখন কেউ রাস্তায় নামতে পারছে না। কিন্তু কারফিউ একসময় শেষ করতে হবে। তখন কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে, সেটা বলা মুশকিল।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর